Master Rintu:“আমি ছোটবেলা থেকেই জন্মগত ট্যালেন্টেড! আমার থেকে অনেক অপদার্থ শিল্পীদের নিয়ে কাজ করা হচ্ছে।” – বাংলা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির অন্ধকার জগৎ নিয়ে তীব্র ক্ষোভের সুর একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেতার কন্ঠে📌
মাস্টার রিন্টু, একসময় অভিনয় জগতে বেশ পরিচিত নাম। চিরাচরিতভাবে যিনি পরপর অভিনয় করেছেন মিঠুন, প্রসেনজিৎ, দেব, জিৎ, হিরণ, সোহমের মতো মেগাস্টারদের সঙ্গে। কখনও হয়েছেন বন্ধু কখনও বা ভাই আবার কখনও বা জামাই। সব চরিত্রেই তাঁকে সাবলীলভাবে অভিনয় ফুটিয়ে তুলতে দেখেছেন দর্শকরা। কিন্তু কোথায় হারিয়ে গেলেন একসময়ের বড়পর্দার সেই অভিনেতা ?
কেমন করে দিনযাপন করছেন তিনি? সিনেমার পর্দার আড়ালে কিভাবেই বা জীবিকা নির্বাহ করছেন তিনি বর্তমানে? এসব খোঁজ মিলল হঠাৎই।
বর্তমানে বড়পর্দায় টেলিভিশনে ও ওয়েব সিরিজে উঠে আসছে বহু নতুন মুখ। তাঁরা এখন সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে জনপ্রিয়তাও পাচ্ছেন খুব। কিন্তু বর্তমানে খেয়াল করলে দেখা যাচ্ছে অনেক প্রতিভাই যেন হারিয়ে যাচ্ছে লাইমলাইটের পিছনে নিকষ কালো যবনিকার গাঢ় অন্ধকারে।
সেরকমই এক প্রতিভার নাম মাস্টার রিন্টু। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর জীবনে টিকে থাকার কিছু লড়াইয়ের কথা। তিনি জানান,“তাঁর অভিনয় জীবনে পদার্পণ শিশুশিল্পী হিসেবে ১৯৮৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে।বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র অভিনেতা মনোজ মিত্র’র হাত ধরে, তাঁর মায়ের প্রচেষ্টায়। তাঁর প্রথম সিনেমা শ্রদ্ধেয় বীরেশ চট্টোপাধ্যায় পরিচালিত “একান্ত আপন” করার কথা থাকলেও,সেই ছবি থেকে বাদ পরেছিলেন অভিনেতা।
কিন্তু ঠিক সেইদিনই পরিচালক মনোজ মিত্র’র তত্ত্বাবধানে ভাগ্যের শিকে ছেঁড়ে তাঁর। ”তুমি কত সুন্দর” ছবিতে অভিনেতা তাপস পাল ও সন্ধ্যা রায়ের ছেলের ভূমিকায় অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি।
তারপর করেছিলেন একের পর এক ছবি। অভিনেতার মাধ্যমিক পরীক্ষার পরই তাঁর জীবনে আসে চরম বিপর্যয়। তাঁর বাবার অফিস বন্ধ হয়ে যায়, সাথেই হয়েছিল মেজর হার্ট অ্যাটাক ফলত তাঁর বাবা মারা যান। সেই সময়ই অভিনেতার জীবনে আসে অর্থ কষ্ট। তিনি টিউশন করে জোগাড় করেছিলেন পড়ার খরচ। তাতে তিনি পাশে পেয়েছিলেন অনেক শিক্ষদের। কিন্তু তিনি বলেন “শুধু সেসময় এবং পরবর্তীকালে যারা সাহায্য করেননি সেটা হল ইন্ডাস্ট্রি।”
তিনি বলেন “আজকাল সিনেমা জগতের মানুষেরা অভিনয়, নিজেদের কাজ বা ইন্ডাস্ট্রির উন্নতির কথা বাদ দিয়ে সমাজমাধ্যমে অন্যান্য কথা বলে যাচ্ছে নয়ত প্রবেশ করছে রাজনীতিতে।”
তিনি চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নবাগতা কিংবা বর্তমানে যাঁরা কাজ করছেন তাঁদের উদ্দেশ্যে বলেন “যাঁরা এখন নিজেদের অনেক বড় শিল্পী ভাবছেন তাঁদের চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি আমাকে এখনও সেরকম কোনও চরিত্রে কেউ কাজ দিলে প্রমাণ করে দেব আমার অভিনয় দক্ষতা। আমি থিয়েটার ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসতে পারি কিন্তু আমি তরুণ মজুমদার, উৎপল দত্তের ছাত্র, তা প্রমাণ করে দেব”।
তিনি জানান “অভিনয় তাঁর ভালোবাসা কিন্তু তাঁকে বর্তমানে তাঁর সংসার চালানোর জন্য অফিস করতে হয় প্রতিনিয়ত,তাঁর ইচ্ছে বিরুদ্ধে হলেও।”
অর্থাৎ অভিনেতা এখনও অপেক্ষায় রয়েছেন যদি ইন্ডাস্ট্রির কেউ তাঁকে নিয়ে আবারও কোন ছবিতে, ছোটপর্দায় কিংবা ওটিটিতে কোনো দাপুটে চরিত্রে তাঁকে কাস্ট করার সাহস দেখান,সুযোগ দেয় অভিনয়ের তাহলে তিনি আরও একবার নিজেকে প্রমাণ করে দেখাবেন দর্শকদের সামনে।