Ditipriya Roy:দিতিপ্রিয়াকে মাঝরাতে ছবি পাঠিয়ে অশ্লীল মন্তব্য জিতুর! “বেশ হয়েছে, এটা বয়ফ্রেন্ডকে পাঠাও,এই রাতেই ব্রেকআপ হয়ে যাবে…” সোশ্যাল মিডিয়ায় বিস্ফোরক মন্তব্য দিতিপ্রিয়ার, কী বললেন অভিনেত্রী?
‘আর্য’ও ‘অপর্ণা’র রসায়ন পর্দায় বরাবর দর্শকদের নজর কেড়েছে। জি বাংলার ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ ধারাবাহিকে জুটি হিসেবে দর্শক দেখছেন জিতু কামাল ও দিতিপ্রিয়া রায়কে। দর্শকের মন জয় করেছেন তাঁরা। পর্দায় তাঁদের রসায়ন যাই হোক না কেন বাস্তবে নাকি এক অপরের মুখ দেখাদেখি বন্ধ। একে অপরকে এড়িয়ে চলছেন তাঁরা। এর মাঝেই সমাজমাধ্যমে অভিনেতার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন তিনি। অভিনেতার সাক্ষাৎকারে বলা কিছু কথা থেকে শুরু করে হোয়াটসঅ্যাপের কথোপকথন,সবটাই নিজের সমাজমাধ্যমের পাতায় তুলে ধরলেন অভিনেত্রী।
দিতিপ্রিয়া সমাজমাধ্যমে লেখেন,”গত কয়েকদিন ধরে চলতে থাকা আমাকে নিয়ে নানা রকমের স্পেকুলেশন নিয়ে আমি স্বভাবতই চুপ ছিলাম। কারণ আমি বিশ্বাস করি “Ignorance is bliss”।
প্রথমত, একটি ছবি পোস্ট করা নিয়ে জলঘোলা শুরু। প্রোডাকশন টিম সবসময়েই আমাদের কিছু ছবি দিয়ে থাকে দুজনকেই সমাজমাধ্যমে পোস্ট করার জন্য। আমার কো-অ্যাক্টর সেই সব ছবিই পোস্ট করেন। সেই ছবিগুলোর মধ্যে একটি আমার ব্যক্তিগতভাবে একেবারেই ভালো লাগেনা। ছবিটা তিনি ডিলিট করেন।
তার পর বিভিন্ন ইন্টারভিউতে বারবার বলেছেন, “আমার পোস্ট করা ছবিতে নাকি অনেক খারাপ ও নোংরা কমেন্ট এসেছে, তাই ও (আমি) খুব কষ্ট পেয়েছে “। কিন্তু আমি তো তার সঙ্গে কথাই বলিনি!
আমি শুধুমাত্র প্রোডাকশনকে জানিয়েছিলাম, কারণ ছবিটা তাদেরই তোলা ছিল আর ছবিটা আমার দৃষ্টিতে ইনঅ্যাপ্রোপ্রিয়েট মনে হয়। আমি কোনোরকম নোংরা বা অশ্লীল কমেন্টের কথা কখনোই বলিনি এবং কেউ-ই এই আমার ছবিটি ইনঅ্যাপ্রোপ্রিয়েট লাগা কে নিয়ে সেইসময় আমায় কোনও আপত্তি জানায়নি। বরং পরবর্তীকালে বারবার শুনতে হয়েছে, আমি নাকি, তাই স্পন্টেনিয়াসলি হ্যান্ডেল করতে পারি না! একটা ছবি তো, তা নিয়ে এত কিছু!
তিনি আরো বলেন, “আমি দিতিপ্রিয়াকে খুব শ্রদ্ধা করি এবং স্নেহ করি। ওর ডেডিকেশন অন্যরকমের”। আমার কো-অ্যাক্টর আমাকে ভীষণ সম্মান করেন ও স্নেহ করেন—এটাই আমি বিশ্বাস করতে চাই।
প্রথম এক মাসের পর থেকেই আমার কো-অ্যাক্টর আমার সঙ্গে কথা বলেন না, শুধু হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ রাখেন। আমি তাকে কারণ জিজ্ঞেস করলে বলেন, “তোমার মা-কে ভয় পাই, কিন্তু তোমাকে ভীষণ সম্মান করি।”
এতটাই স্নেহ করেন ও সম্মান করেন যে একদিন আমাকে জিজ্ঞেস করেন, “ওই ইভেন্টে যাচ্ছো?” আমি বলি, “না, আমার ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট আছে।” তিনি জানতে চান, “কেন, তুমি কি প্রেগন্যান্ট?”
আরেকটি ঘটনায়, একটি AI-তে বানানো ছবি যেখানে দেখা যায় আমরা চুম্বন করছি—ওই ছবি আমাকে মাঝরাতে পাঠিয়ে লেখেন, “বেশ হয়েছে, এটা বয়ফ্রেন্ডকে পাঠাও”। সাথে লেখেন, “এই রাতেই ব্রেকআপ হয়ে যাবে ”।
এরপর আরেকদিন আমাকে মেসেজ করে বলেন, “আমার তোমার সঙ্গে কথা আছে, দেখো যেন তোমার মা না জানতে পারেন । কাকিমাকে আমি ভয় পাই।”
এই সব ঘটনাগুলো প্রাথমিক ভাবে মজার ছলে নিয়ে থাকলেও পরবর্তীকালে আমাকে অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলেছে। সেটেও কিছু বিষয় নিয়ে আমার অস্বস্তি শুরু হয়েছিল। আমাদের শ্যুটিং ফ্লোরে প্রায় সবাই জানে এই ঘটনা। আমি এতদিন চুপ ছিলাম কারণ এসব নিয়ে গণ্ডগোল করে কাজ নষ্ট করতে আমার পরিবার আমাকে শেখায়নি।আমাদের দারুণ চলতে থাক শো’টা ব্যহত হোক আমি চাইনি।
আর চুপ থাকতে পারলাম না। কিছু মানুষ মুখ বুজে সহ্য করে গেলে, কিছু মানুষ সীমা ছাড়িয়ে যায়। আমি কখনও অন্যায়ের সঙ্গে আপস করিনি, আর করবোও না। প্রতিদিনের এই কাঁটাছেঁড়া এখন খুব একতরফা হয়ে যাচ্ছে।
আমার সিরিয়ালের কো-অ্যাক্টরের আরও বেশ কয়েকটি কাজেই কো-অ্যাক্টরদের সঙ্গে নানা ভাবে সমস্যা হয়েছে বলে শোনা যায়। তবে আমার কাজ উনি শুরু থেকেই খুব অ্যাপ্রিসিয়েট করেছেন—আমিও চেষ্টা করেছি রেসিপ্রোকেট করার।
আমি যাঁকে সম্মান করি, তাকে সব সময় সব জায়গায় একই রকম ভাবে সম্মান করে এসেছি, তা সোশ্যাল মিডিয়ায় হোক কিংবা সামনাসামনি। একেক জায়গায় একেক রূপ আমার নেই—এই দ্বিচারিতা আমার একেবারেই অপছন্দ।
রইল বাকি আমার “স্পন্টেনিয়াস” হওয়া। ‘ডাকঘর’ নামের একটি সিরিজের প্রমো চলাকালীন আমি ও আমার সেই সিরিজের কো-অ্যাক্টর ‘It’s official’ লিখে সমাজমাধ্যমে একটি রোমান্টিক ছবি পোস্ট করি—এর একটাই উদ্দেশ্য গুঞ্জন ছড়ানো! কারণ এটা ছিল একটি “স্পন্টেনিয়াস” প্রোমোশনাল স্ট্র্যাটেজি।
মানুষের সুবুদ্ধি হোক, এই কামনাই করি।”